শাহ আলম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি।
জাতীয়ভাবে পালিত ঐতিহাসিক ৫ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার (৫ আগস্ট) টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিএনপির আয়োজনে ছিল নানা কর্মসূচি ও জনসমাগম। তবে দিন শেষে রাজনৈতিক বিভক্তি ও বিভ্রান্তির কারণে এ আয়োজন রূপ নেয় সংঘর্ষে, আহত হন অন্তত ১৫ জন।
সকালে কালিহাতী আর.এস. পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় সমাবেশে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যোগ দেন দলীয় নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো মাঠ। উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম শোভা-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো।
সাংগঠনিক ঐক্য ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে টিটো বলেন- এই দিনটি শুধু একটি স্মৃতির নয়, গণতন্ত্রের বিজয়ের দিন। আজকের শপথ হোক-দলমত নির্বিশেষে, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব আমরা।
সমাবেশ শেষে একটি শান্তিপূর্ণ বিজয় মিছিল কালিহাতীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে। ঠিক তখনই উপজেলা বিএনপির অপর একটি গ্রুপ কালিহাতী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৃথকভাবে বিজয় দিবস উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন করে। মিছিলটি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পৌঁছানোর আগেই উভয় গ্রুপের মধ্যে শুরু হয় উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা, যা কিছুক্ষণের মধ্যেই রূপ নেয় ধাক্কাধাক্কি, মারামারি ও সংঘর্ষে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী আহত হন, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে টাঙ্গাইল সদর ও কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে কালিহাতী থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে সংঘর্ষ থেমে যায়, তবে কিছু সময়ের জন্য এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় নাগরিক সমাজ ও সচেতন মহল এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণতন্ত্র ও অধিকার আদায়ের প্রতীক এই দিনে নিজেদের মধ্যে দলীয় কোন্দল ও বিভাজন অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জার।
কালিহাতী থানা পুলিশের ওসি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং যাতে পুনরায় কোনো উত্তেজনা না ছড়ায়, সেজন্য এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল জোরদার করা হয়েছে।